স্মৃতির পাতায় ইসলামিক স্টাডিজ
স্মৃতির পাতায় ইসলামিক স্টাডিজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯১২ সালের ২৭ মে বঙ্গীয়
সরকার কর্তৃক ১৩ সদস্য বিশিষ্ট নাথান কমিটি গঠিত হয় যার অন্যতম প্রধান সদস্য ছিলেন
তৎকালীন ঢাকা মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট
শামসুল উলামা আবু নসর মুহম্মদ ওহীদ।তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন হেড অব ডিপার্টমেন্ট
ছিলেন।প্রথমে নাথান কমিটি ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগকে একটি অনুষদ করার
প্রস্তাব উপস্থাপন করে এবং সন্মান কে BI(ব্যাচেলর অব ইসলামিক স্টাডিজ) এবং মাস্টার্সকে
MI(মাস্টার্স অব ইসলামিক স্টাডিজ) করার প্রস্তাব
রাখেন। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিচ্ছায় দুটি দাবিই ভেস্তে যায়
এবং তা BA ও MA করা হয়।স্যার শামছুল উলামা আবু নসর মুহম্মদ ওহীদ আসামের
শিক্ষামন্ত্রীর দ্বায়িত্বও পালন করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক ইস্টাডিজ বিভাগের হেড অব ডিপার্টমেন্ট
জে.ডব্লিউ. হুইক একজন ইউরোপীয় খ্রিষ্টান ছিলেন।তিনিই
বিভাগের একমাত্র অন্যধর্মাবলম্বী হেড অব ডিপার্টমেন্ট ছিলেন।
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র ড.সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্র যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন
করেন।তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ ভিসি।
তাছাড়া ড.মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর জ্যেষ্ঠ কন্যার জামাতা ড. সিরাজুল
হক দীর্ঘ ২২ বছর এই বিভাগের হেড অব ডিপার্টমেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।স্বীয়
শশূরের ন্যয় তিনিও বহু ভাষা আয়ত্ত্ব করেন।তিনি কলা অনুষদের দুইবার নির্বাচিত ডীন ছিলেন।এবং
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্বও পালন করেছেন।তিনি
এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।তিনি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাদ্যক্ষ এবং পরে ভিসি ছিলেন।তিনি
স্বাধীনতা পদক ও একুশে পদক সহ বিভিন্ন পদক লাভ করেন।তিনি
জাতিসংঘ এবং হোয়াইট হাউসের প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেছেন।এছাড়া
তিনি ইউরোপ, আফগানস্তান,
পাকিস্তান সহ ১৯টি দেশের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছন।
এরপর বিভাগের যে পণ্ডিতের নাম আসে তিনি হলেন ড. মোহাম্মদ এসহাক।শিক্ষক
হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের মাত্র ৮৫ দিনের মাথায় তিনি সমগ্র কুরআন মুখস্থ করনে।তার
নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরীর নামকরণ হয়েছে।এছাড়াও
এ বিভাগের ছাত্র আব্দুর রহমান বিশ্বাস সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক
সরকারের প্রতিষ্ঠায় তার অসামান্য অবদান ছিল।তাছাড়া বর্তমান রাশেদ খান মেননের পিতা আব্দুল
জব্বার খান ছিলেন এই বিভাগেরই এবং তিনি সাবেক স্পীকার ছিলেন।কথা
সাহিত্যিক আবুল ফজল ছিলেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র।সর্বপরি
আমাদের সবার প্রিয় ড. আ.ন.ম. রইস
উদ্দিন স্যার।তিনি ১৯৯৮ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
প্রকাশিত বিংশ শতাব্দির ২০০০
outstanding People এর মধ্যে
একজন।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলে এই বিভাগের প্রথম মহিলা শিক্ষক
হিসেবে ২০১৫ সলে নিয়োগ লাভ করেন কাজী ফারজান আফরীন।
লেখক:
মো:পারভেজ আহম্মদ-ISDU
মন্তব্যসমূহ