বাংলা বানানে সন্ধির নিয়ম
সন্ধি
সন্ধি শব্দের অর্থ মিলন।পাশাপাশি দুটি বর্ণের মিলনকে সন্ধি বলা হয়।বাংলা
বানানে সন্ধি মোট তিন প্রকার।যথাঃ
1.
স্বরসন্ধি
2.
ব্যঞ্জনসন্ধি এবং
3.
বিসর্গসন্ধি
স্বরসন্ধি
স্বরবর্ণের সাথে স্বরবর্ণের মিলনকে
স্বরসন্ধি বলে।বাংলা বানানে স্বরসন্ধি সংক্রান্ত নিয়ম সমূহ হলোঃ—
1.
সন্ধিতে অ/আ এর পর অ/আ
থাকলে উভয় মিলে ‘আ’ হয়। যেমনঃ হিম+আলয়=হিমালয়।
2.
সন্ধিতে অ/আ এর পর ই/ঈ
থাকলে উভয় মিলে ‘এ’ হয়। যেমনঃ শুভ+ইচ্ছা=শুভেচ্ছা।
3.
সন্ধিতে অ/আ এর পর উ/ঊ
থাকলে উভয় মিলে ‘ও’ হয়।যেমনঃ সূর্য+উদয়=সূর্যোদয়।
5.
সন্ধিতে অ/আ এর পর ঋত
থাকলে উভয় মিলে ‘আর’ হয়। যেমনঃ শীত+ঋত=শীতার্থ।
6.
সন্ধিতে অ/আ এর পর এ/ঐ
থাকলে উভয় মিলে ‘ঐ’ হয়। যেমনঃ মত+ঐক্য=মতৈক্য।
7.
সন্ধিতে অ/আ এর পর ও/ঔ
থাকলে উভয় মিলে ঔ হয়।যেমনঃ মহা+ঔষধ=মহৌষধ।
8.
সন্ধিতে ই/ঈ এর পর ই/ঈ
থাকলে উভয় মিলে ‘ঈ’ হয়খ যেমনঃ রবি+ইন্দ্র=রবীন্দ্র।
9.
সন্ধিতে ই/ঈ এর পর ই/ঈ
ছাড়া অন্য কোন স্বরবর্ণ থাকলে ‘য-ফলা’ হয়।যেমনঃ ইতি+আদি=ইত্যাদি।
10. সন্ধিতে উ/ঊ এর পর উ/ঊ থাকলে উভয় মিলে ‘ঊ’ হয়। যেমনঃ মরু+উদ্যান=মরূদ্যান।
11. সন্ধিতে উ/ঊ এর পর উ/ঊ ছাড়া অন্য কোন স্বরবর্ণ থাকলে ‘ব-ফলা’ হয়।যেমনঃ সু+আল্প=স্বল্প।
ব্যঞ্জনসন্ধি
ব্যঞ্জনবর্ণের সাথে
ব্যঞ্জনবর্ণের অথবা স্বরবর্ণের মিলনকে ব্যঞ্জনসন্ধি বলে।বাংলা বানানে ব্যঞ্জনসন্ধি
সংক্রান্ত নিয়মসমূহ নিচে প্রদান করা হলোঃ-
1.
সন্ধিতে স্বরধ্বনির পর
ছ থাকলে ‘চ্ছ’ হবে। যেমনঃ দেখা+ছলে=দেখাচ্ছলে।
2.
সন্ধিতে ত/দ এর পর চ/ছ
থাকলে ত/দ এর স্থানে ‘চ’ হবে।যেমনঃ উৎ+ছেদ=উচ্ছেদ।
3.
সন্ধিতে ত/দ এর পর জ/ঝ
থাকলে ত/দ এর স্থানে ‘জ’ হবে। যেমনঃ
বিপদ+জনক=বিপজ্জনক।
4.
সন্ধিতে ত/দ এর পর শ
থাকলে ত/দ এর স্থানে ‘চ’ এবং শ এর স্থানে ‘ছ’ হবে। যেমনঃ উৎ+শ্বাস=উচ্ছ্বাস।
5.
সন্ধিতে ত/দ এর পর ড/ঢ
থাকলে ত/দ এর স্থানে আরেকটি ‘ড’ হবে। যেমনঃ উৎ+ডীন=উড্ডীন।
6.
সন্ধিতে ত/দ এর পর ন
থাকলে ‘ন্ন’ হবে। যেমনঃ উৎ+নত= উন্নত।
7.
সন্ধিতে ত/দ এর পর ম
থাকলে ‘ন্’ হবে। যেমনঃ তৎ+মধ্যে= তন্মোধ্যে।
8.
সন্ধিতে ত/দ এর পর ল
থাকলে ‘ল্ল’ হবে। যেমনঃ উৎ+লেখ= উল্লেখ।
9.
সন্ধিতে ত/দ এর পর হ
থাকলে ত/দ এর স্থানে ‘দ’ এবং হ এর স্থানে ‘ধ’ হবে।যেমনঃ পদ+হতি= পদ্ধতি।
10. সন্ধিতে ম এর পর ক/খ/গ/ঘ/চ/শ ইত্যাদি থাকলে ম এর স্থানে ‘ং’ হবে। যেমনঃ
সম+সার=সংসার।
বিসর্গসন্ধি
বাংলা বানানে বিসর্গসন্ধি
সংক্রান্ত নিয়মসমূহ নিচে প্রদান করা হলোঃ-
1.
বিসর্গের পর চ/ছ থাকলে বিসর্গের স্থানে ‘শ’
হয়। যেমন- দুঃ+চরিত্র= দুশ্চরিত্র।
2.
বিসর্গের পর ত থাকলে বিসর্গের স্থানে ‘স’
হয়। যেমন- মনঃতাপ= মনস্তাপ।
3.
অ এর পর অবস্থিত বিসর্গের পর ঘোষ
আল্পপ্রাণ/ঘোষ মহাপ্রাণ/নাসিক্য/য/র/ল/হ থাকলে বিসর্গের স্থানে ‘ও’ হয়। যেমন- তপঃবন= তপোবন।
4.
বিসর্গের পর অ/আ/উ থাকলে বিসর্গের স্থানে
‘র’ হবে। যেমন- পুনঃআয়= পুনরায়।
5.
বিসর্গের পর ‘র’ থাকলে ‘ঈ’ হবে। যেমন-নিঃ+রস=
নীরস।
Download From Here.........
মন্তব্যসমূহ