যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বাংলাদেশ


যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বাংলাদেশ

উপস্থাপনা
     যুদ্ধাপরাধ মানবতাবিরোধী এক ঘৃণ্য অপরাধ।স্বাধীনতাকামী জাতির উপর বর্বর নির্যাতন ও তাদের স্বাধীনতায় বাধাগ্রস্থ করাই তাদের প্রধান কাজ।বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যুদ্ধাপরাধ এক স্পর্শকাতর বিষয়। স্বাধীনতার ৪৫ বছর অতিবাহিত হলেও আমার সম্পূর্ণরূপে এ দেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পারিনি।তবে ২০০৯ সালের পর থেকে প্রধান প্রধান যুদ্ধাপরাধীদের মুত্যুদণ্ড ও অন্যান্যদের বিচারের আওতায় আনার ফলে বর্তমানে এদেশের মানুষ কিছুটা হলেও বোঝামুকক্ত হতে পেরেছে।
যুদ্ধাপরাধের সঙ্গা
     যুদ্ধাপরাধ বলতে কোন দেশ, জাতি সামরিক বা বেসামরিক ব্যক্তি কর্তৃক যুদ্ধের প্রথা বা আন্তর্জাতিক নীতিমালা লঙ্ঘন করাকে বোঝায়।
     হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস থেকে প্রকাশিত  ‘দ্য বুক অব কমিউনিজম:ক্রাইম,টেরর,রিপ্রেশন’ গ্রন্থে যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে বলা হয়েছে,
            “যুদ্ধের আইন বা প্রথা লঙ্ঘন করা বলতে হত্যা, নির্যাতন বা সাধারন নাগরিকদের নির্বাসিত করে অধিকৃত জনপদে ক্রীতদাস শ্রম ক্যাম্পে পরিণত করা,আটককৃতদের হত্যা ও নির্যাতন, অপহৃতদের হত্যা সামরিক বা বেসামরিক প্রয়োজনীয়তা ছাড়াই দায়িত্ব-জ্ঞানহীন নগর,শহর ও গ্রামাঞ্চলকে ধ্বংশস্তুপে পরিণত করাকে উল্লেখ করা হয়েছে।”
     চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের ১৪৭ ধারায় যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে বলা হয়,
            “ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা,নির্যাতন বা অমানবিক ব্যবহার এবং কারো শরীর বা স্বাস্থ্যে গুরুতর আঘাত করা বা তার দুর্দশার কারণ তৈরি,অন্যায় ভাবে কাউকে বিতাড়ন বা স্থানান্তর করা বা আটক কারা, শত্রুবাহিনীর সেবাদানে বাধ্য করা,যথাযথ ও নিয়মতান্ত্রিক বিচার পাওয়ার অধিকার থেকে কাউকে জিম্মি করা, বিপুল পরিমানে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ও সম্পত্তি আত্মসাৎ করা, সামরিক প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও বে আইনি ও নীতিবিরুদ্ধ ও ওপরের যেকোন এক বা একাধিক কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
     সুতরাং যুদ্ধাপরাধ বলতে আমরা বুঝি,
                A war crime is an act that constitutes a serious violation of the laws of war that gives rise to the individual criminal responsibility.

বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত সংগঠন
     বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত সংগঠনগুলোর মধ্যে রাজাকার, আল-বদর,আল-শামস, শান্তিবাহিনী বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।নিচে এগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

শান্তি কমিটি
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল পাকিস্তান সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশে বিরাজমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তান প্রশাসনকে সহায়তা করার লক্ষ্যে শান্তি কমিটি গঠিত হয়।এর আগে ৪ এপ্রিল পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টির টিক্কা খানের সাথে সাক্ষাত করে ঢাকায় একটি নাগরিক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহীত হয় এবং ১০ এপ্রিল ১৪০ সদস্য বিশিষ্ট “ঢাকা নাগরিক কমিটি” গঠিত হয়।কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান হন মুসলিম লীগ নেতা খয়েল উদ্দিন।নেতৃত্ব নিয়ে কোন্দলের কারনে ফরিদ আহমেদের নেতৃত্বে একটি অংশ মূল কমিটি থেকে বেরিয়ে এসে ‘স্টিয়ারিং কমিটি’ গঠন করে যা পরে ‘পূর্ব পাকিস্তান শান্তি ও কল্যান কাউন্সিল” নাম ধারন করে এবং এর প্রধান হন ফরিদ আহমেদ এছাড়া অন্যান্য নেতাদের মধ্যে গোলাম আজম,মাহমুদ আলী,ইউসুফ আলী চৌধুরী বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য।বিাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকাণ্ড হত্যা,ধর্ষন,গুম ইত্যাদি কাজে নিয়োযিত ছিল শান্তি কমিটি।
রাজাকার বাহিনী
 ‘রাজাকার’ ফার্সি শব্দ।এর অর্থ ‘স্বেচ্ছাসেবী’।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীদের সাহায্য করার লক্ষ্যে খুলনায় মে মাসে খানজাহান আলী রোডের একটি আনসার ক্যাম্পে ৯৬ জন পকিস্তান পন্থী কর্মী নিয়ে রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়।পরবর্তীতে এর সদস্য সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশী হয়ে যায়।যুদ্ধের সময় এরা বাংলাদেশে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়।বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এদের অত্যাচারের চিহ্ন আজও বিদ্যমান।
আল-বদর বাহিনী
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান বাহিনীকে সহায়তা এবং পাকিস্তান রাষ্ট্র অক্ষুন্ন রাখার পক্ষ্যে জনমত গড়ে তোলার কাজে নিয়োজিত আধা সামরিক বাহিনী।জেনারেল নিয়াজীর পৃষ্টপোষকতায় সেপ্টেম্বর মাসে ময়মনসিংহে এই বাহিনী গঠিত হয়।ইসলামের ইতিহাসের বদর যুদ্ধকে আদর্শ করে এ বাহিনী গঠিত হয়।এদের লক্ষ্য ছিলো সন্ত্রাশ ও রাজনৈতিক হত্যার মাধ্যমে নিরীহ মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা।আল বদর বাহিনী ঢাকার রায়েরবাজার বদ্ধভূমিতে বুদ্ধিজীবী হত্যার সাথে জড়িত ছিল।
আল শামস
১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাহযোগী স্বাধীনতা বিরোধী এক শ্রেণীর ধর্মান্ধ ও শিক্ষিত তরুনদের উদ্যেগে আল শামস বাহিনী গঠিত হয়।এরা আল বদর বাহিনীর সাথে মিশে স্বাধীনত্কামী ব্যক্তিদের এবং বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে।
বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের প্রকৃতি
বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের প্রকৃতি খুবই লোমহর্ষক।কয়েকটি প্রকৃতি নিচে তুলে ধরা হলো-
1.   হত্যা,গণহত্যা
2.   লুট
3.   আইনভঙ্গ,সনদ ও চুক্তি অমান্য
4.   সম্পদ বিনষ্ট
5.   ধর্ষণ,গণধর্ষণ
6.   অগ্নিকাণ্ড ইত্যাদি
সমকালীন বিশ্বের পত্রিকার প্রতিবেদন গুলোর মাধ্যমে এর প্রমাণ পাওয়া যায়।যেমন-
টাইমস অব ইণ্ডিয়া
আমেরিকান এইড কর্মসূচীর অধীনে ৩ বছর ঢাকায় ছিলেন জন রোড নামক  একজন আমেরিকান। তিনি বলেন,
    ‘পূর্ব বাংলায় জঙ্গলের আইন চালু রয়েছে।সুপরিকল্পিতভাবে নিরস্ত্র বেসামরিক জনসাধারন,বুদ্ধিজীবী ও হিন্দুদের হত্যা করা হচ্ছে।’
নিউইয়র্ক টাইমস
৩০ মার্চ ১৯৭১ সালে পত্রিকাটি উল্লেখ করে যে,সর্বত্র বেসামরিক ব্যক্তিদের সেনাবাহিনী হত্যা করছে।
টাইম
৩ মে ১৯৭১ নিউইয়র্কের সাপ্তাহিক টাইমে উল্লেখ করা হয় যে, একজন যুবক সৈন্যদের কাছে আকূল আবেদন করছে যে,তার সাথে যাকিছু করা হোক কিন্তু তার ১৭ বছরের বোনকে যেন তারা রেহাই দেয়।কিন্তু তারই সামনে তার বোনকে বেয়নেট দিয়ে ‍নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়।
ল্য এক্সপ্রেস
ফ্রান্সের ল্য এক্সপ্রেস পত্রিকার সাংবাদিক বলেন,
   প্রতি রাতেই আমি মেশিনগান আর মার্টারের গুলির শব্দ শুনতাম।বাঙালিদের  তাড়িয়ে কাড়িয়ে ধরত সৈন্যরা।তারপর যানবাহনের পেছনে এমনভাবে বেধে দিত যাতে তাদের মাথা মাটিতে বারবার এসে আঘাত করে।
সানডে টাইমস
সানডে টাইমসের পাকিস্তান প্রতিনিধি বলেন,
     পুরান ঢাকার কয়েকটি এলাকা নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার সময় সান্ধ্য আইনে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল পরবর্তীতে তাদের কোন চিহ্ন মেলেনি।মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে ২৩ জন মহিলা ও শিশুর পঁচা লাশ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

     ১৫ এপ্রিল তিনি ইকবাল হলের(জহুরুল হক হলের)সিঁড়িতে তিনি প্রচুর রক্ত দেখতে পান এবং হলের ছাদে পারজন ছাত্রের মাথা তখনও পঁচছে।ডিডিটি পাউডার ছড়ানোর পরও চারিদিকে দূর্গন্ধ।
শীর্ষ পাঁচ যুদ্ধাপরাধ
১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা এদেশে ১৭ ধরনের যুদ্ধাপরাধ, ১৩ ধরনের মানবাতা বিরোধী অপরাধ এবং ৪ ধরনের গণহত্যা সহ মোট ৫৩ ধরনের অপরাধে লিপ্ত ছিল।এর মধ্যে শীর্ষ ৫ যুদ্ধাপরাধ হলো-
1.   অপরেশন সার্চ লাইটের নামে ৫০ হাজার বাঙালিকে হত্যা ও যুদ্ধকালীন সময়ে মোট ৩০ লক্ষ্য বাঙালিকে নৃশংসভাবে হত্যা।
2.   লুণ্ঠন,ধর্ষণ,অগ্নিসংযোগ ও দেশজুড়ে হত্যাকাণ্ড
3.   বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, সমাজকর্মী ও ছাত্রদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা
4.   ২ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রম নষ্ট।
5.   হিন্দুদের প্রতি নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ ও গণধর্ষণ।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বাংলাদেশ
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর ৯৩০০০ পাকিস্তান বাহিনী ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে ভারত বাংলাদেশ যৌথ কমাণ্ডোর নিকট আত্মসমর্পণ করে।পরবর্তীতে যুদ্ধাপরাধীদের সনাক্তকরণ এবং তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।নিচে এগুলি তুলে ধরা হলো-
বিচারের ঘোষণা ও আইন পাস
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর রেসকোর্স ময়দানে এক ঘোষণার মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার ঘোষনা দেন।Bangladesh Collaborators(Special tribunals) Order, 1972  নামে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য প্রথম আইন পাস হয়।
দালাল আইন প্রয়োগ সংশোধন ও বিচার শুরু
১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারী রাষ্ট্রপতির ঘোষনা দ্বারা দালাল আইন প্রবর্তিত হয়।একই বছর ফেব্রুয়ারী মাসে তদন্ত পক্রিয়া শুরুর মাধ্যমে আইনটির প্রয়োগ ঘটে।পরবর্তীতে ‍তিনদফা সংশোধনীর পর এ আইনের অধীনে ৩৭ হাজারের বেশী ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় এবং বিভিন্ন আদালতে তাদের বিচার আরম্ভ হয়।
সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা
১৯৭৩ সালের ৩০ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু মোট ১৮ ধরনের অপরাধের সাথে জড়িতদের ছাড়া অন্যন্যদের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন।এই ১৮ ধরনের অপরাধ হলো-
1.   বাংলাদেশর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর চেষ্টা
2.   বাংলাদেশর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র
3.   রাষ্ট্রদ্রোহীতা
4.   হত্যা
5.   হত্যার চেষ্টা
6.   অপহরণ
7.   হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ
8.   আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ
9.   অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা
10. ধর্ষণ
11.  দস্যুবৃত্তি
12. দস্যুবৃত্তিকালে আঘাত
13. ডাকাতি
14. খুনসহ ডাকাতি
15. হত্যা বা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি বা ডাকাতি
16. আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্যের সাহায়্যে ক্ষতিসাধন
17. বাড়িঘর ধ্বংশের উদ্দেশ্যে আগুন অথবা বিস্ফোরক দ্রব্য ব্যবহার।এবং
18. ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪৩৬ ধারা
সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার প্রভাব
বঙ্গবন্ধু কর্তৃক সাধারণ ক্ষমা ঘোষণাকালীন কারাগারে ৩৭ হাজার ৪১ জন যুদ্ধাপরাধী বন্দি ছিল।৭৩টি দ্রুত বিচার ট্রায়ব্যুনাল করে তাদের বিচার করা হচ্ছিল।সাধারণ ক্ষমার আওতায় ২৫ হাজার ৭১৯ জন ছাড়া পেয়ে যায়।বাকী ১১ হাজারের বিচার চলছিল।১৯৭৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ২৮৮৪ টি মামলার নিষ্পত্তি হয়। এতে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড ও বাকীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়।
যুদ্ধবন্দীদের বিচারের দাবি ও তা প্রত্যাহার
১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর আত্মসমর্পনের পর বাংলাদেশ ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধবন্দিকে বিচারের জন্য সনাক্ত করে এবং চুক্তি অনুযায়ী বাকীদের পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়।তবে ১৯৭৪ সালে OIC সম্মেলনে পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিলে ভারত,পাকিস্তান বাংলাদেশের এক বৈঠকে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তির স্বার্থে ঐ ১৯৫ জন যুদ্ধবন্দীকে পাকিস্তানে ফেরত ও তাদের বিচারের দাবি প্রত্যাহারে বাংলাদেশকে রাজি করানো হয়।
নির্বাচনী ইশতেহার
২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি আওয়ামীলীগের নির্বাচনী ইশতেহারভুক্ত হয়।নির্বাচনে আওয়ামীলীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং এ পর্যন্ত প্রধান প্রধান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার পাশাপাশি অন্যদের বিচারের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।


ট্রায়ব্যুনাল গঠন
২০০৯ সালের ৯  জুলাই জাতীয় সংসদে ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ(ট্রায়ব্যুনালের) সংশোধনী পাস হয়।এ অনুযায়ী ২০১০ সালের ২৫ মার্চ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের লক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রায়ব্যুনাল-১ গঠিত হয়।বিচার কাজকে আরও গতিশীল করতে ২০১২ সালের ২২ মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রায়ব্যুনাল-২ গঠিত হয়।পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর তারিখে ট্রায়ব্যুনাল-১ পূনর্গঠন করা হয় এবং ট্রায়ব্যুনাল-২ কে নিষ্ক্রিয় করা হয়।
ট্রায়ব্যুনালের রায়
জুলাই ২০১৮ সাল পর্যন্ত ট্রায়ব্যুনাল মোট ৩৩টি রায় দেয়।এর রায়ের মাধ্যমে ৭১ জনের সাজা হয়।এর মধ্যে ৫১ জনের মৃত্যুদণ্ড হয় এবং ১৭ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড ও ৩ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া যুদ্ধাপরাধীদের তালিকা
এ পর্যন্ত মোট ৬জন যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।তারা হলো-
1.    আব্দুল কাদের মোল্লা-------১২-১২-২০১৩
2.    মুহাম্মদ কামারুজ্জামান--------১১-০৪-২০১৫
3.    আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ------২২-১১-২০১৫
4.    সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী-----২২-১১-২০১৫ 
5.    মতিউর রহমান নিজামী------১০-০৫-২০১৬
6.    মীর কাসেম আলী---------০৩-০৯-২০১৬
শেষকথা
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বাংলাদেশ শীর্ষক উপরিউক্ত দীর্ঘ আলোচনার প্রেক্ষিতে আলোচনার শেষপ্রান্তে এসে আমারা একথা বলতে পারি,ইতিহাস এই কথার সাক্ষ্য দেয় যে,পৃথিবীর সূচনা লঘ্ন থেকে যতধরনের স্বাধীনতা বিরোধী,ক্ষমতালোভী রক্তপিপাসুদের আগমন হয়েছে, তাদের শেষটা ভালো হয়নি।তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হয়েছে অথবা তাদের নির্মম মৃত্যু হয়েছে যেমনটা হযেছিল হিটলার,কাদের মোল্লা,বা সাকা চেীধুরীর।এমনকি মৃত্যুর পরেও তাদের অপমান ভোগ করতে হয়েছে যেমনটা হয়েছিল বাগেরহাটের কুক্ষ্যাত রাজাকার রাজব আলী ফকিরের।




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

Write a letter to your friends inviting him to your sister’s marriage ceremony

বাংলা বানানে ‘ই-কার‘ এবং ‘ঈ-কার’ এর নিয়ম

বাংলায় মধ্য-অ এর উচ্চারণ